মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Sex Cams

রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কালেরগর্ভে বিলিন শ্রীমঙ্গলে দৃষ্টিনন্দন ত্রিপুরা মহারাজার স্থাপনা কাচারী বাড়ি



বিশেষ প্রতিনিধি

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত শতাব্দীর প্রাচীন নিদর্শন দৃষ্টিনন্দন পুরাকীর্তি ঐতিহাসিক ত্রিপুরা মহারাজার স্থাপনা কাচারী বাড়িটি আজ সংস্কারের অভাবে অবহেলায় অযত্নে জরাজীর্ণ অবস্থায় পরিণত হয়েছে। দেওয়াল গুলোতে দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাটল, বিল্ডিং এর ছাদে দেখা দিয়েছে ফাটল, পুরো স্থাপনা জুড়ে শেওলা জমাট বেঁধেছে।
ইতিহাস পর্যালোচনায় জানা যায়, ১৮৯৭ সালে তৎকালীন ত্রিপুরা রাজ্যের মহারাজা কাচারী বাড়িটি নির্মাণ করেন। প্রায় ১.৬৭ একর জায়গার ওপর নির্মিত শতাধিক বছরের পুরনো একতলা কাচারি বাড়িটি প্রস্থে ৩০ ফুট ও দৈর্ঘ্যে ২০ ফুট লম্বা। এতে রয়েছে ৩টি কক্ষ, ৮টি দরজা ও ৯টি জানালা। যার প্রতিটি দেয়াল ১২ ইঞ্চি চওড়া ও প্রাচীন চুন–সুরকি দ্বারা নির্মিত। কারুকাজও রয়েছে চোখে পড়ার মতো।
অষ্টাদশ শতাব্দী হতে পর্যায়ক্রমে ত্রিপুরার মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র মাণিক্য দেববর্মন বাহাদুর এবং আধুনিক ত্রিপুরার স্থপতি মহারাজা বীর চন্দ্র মাণিক্য দেববর্মন বাহাদুর ও তার পুত্র মহারাজা রাধাকিশোর মানিক্য দেববর্মন বাহাদুর ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তাদের রাজত্বকালে এখান থেকেই তাদের প্রশাসনিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করতেন। তৎকালীন সময়ে মহারাজার পদস্থ দায়িত্বশীল কর্মকর্তা শৈলেন্দ্র গুহ শ্রীমঙ্গল অঞ্চলের খাজনা আদায়ের জন্য সহকারি ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। এ কাচারী বাড়িতে তখন খাজনা আদায় হত।
বর্তমানে রক্ষণাবেক্ষণ এবং সংস্কারের অভাবে কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে এই ঐতিহাসিক কাচারী বাড়ি। ইতিমধ্যে এসব পুরাকীর্তির কোনটি আংশিক এবং কোনটি পুরোপুরি ধ্বংসের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে।
এটি দেখার যেন কেহ নাই।
এই ভবনটি সংস্কার করা হলে ঐতিহ্যের দর্শন হয়ে নতুন প্রজন্মের নিকট ইতিহাসে শিক্ষণীয় বিষয় হওয়ার পাশাপাশি দর্শনীয় কেন্দ্রও হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশ্বব্যাপী পরিচিত ও দেশের অন্যতম পর্যটন উপজেলা এবং চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গলের পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও এসব বিষয় মাথায় রেখে এ কাচারি বাড়িটি পর্যটকদের জন্য অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মতই আকর্ষনীয় করে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।